মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের কারেকশন চলমান রয়েছে, যা সামগ্রিক বিয়ারিশ প্রবণতার মধ্যে সাম্প্রতিক নিম্নমুখী মুভমেন্টের পরে শুরু হয়েছে। এই মুভমেন্টটি ব্যাখ্যা করার মতো কোনো স্থানীয় সামষ্টিক অর্থনৈতিক বা মৌলিক কারণ ছিল না। গতকাল ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং ফেডারেল রিজার্ভের প্রতিনিধিদের বিভিন্ন বক্তব্য অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রডিউসার প্রাইস ইনডেক্স বা উৎপাদক মূল্য সূচক (PPI) প্রকাশিত হয়।
PPI প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে সামান্য নিম্নমুখী ছিল, যা মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির ধীরগতির ইঙ্গিত দেয়। এই ধরনের ফলাফল সাধারণত ডলারের জন্য নেতিবাচক হিসেবে বিবেচিত হয়। ফলে, মার্কিন সেশনে ডলারের সামান্য দুর্বলতা দেখা যেতে পারে। তবে, আমরা মনে করি এই প্রতিবেদন মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেনি। আজ, ডিসেম্বর মাসের মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা এই পেয়ারের মূল্যের প্রবণতা এবং আগামী মাসে ফেডের মুদ্রানীতির দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা প্রদান করবে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে মঙ্গলবার 1.0269–1.0277 রেঞ্জে চারটি ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়েছিল। প্রথম তিনটি সেল সিগনাল একে অপরের অনুলিপি ছিল এবং এগুলো ভুল হিসেবে প্রমাণিত হয়। নতুন ট্রেডাররা হয়তো শর্ট পজিশন ওপেন করেছিলেন, তবে এগুলো সম্ভবত স্টপ লস অর্ডারের কারণে ব্রেকইভেনে ক্লোজ হয়ে যায়, কারণ মূল্য ১৫ পিপস পর্যন্ত নিম্নমুখী হয়েছিল। শেষ বাই সিগনালটি আগেরগুলোর তুলনায় কার্যকর ছিল, যদিও এটি উল্লেখযোগ্য মুনাফা আনতে করেনি। তবে, বুধবার পর্যন্ত একটি লং পজিশন হোল্ড করে রাখা একটি কার্যকর কৌশল হতে পারে, বিশেষ করে মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্য নিম্নমুখী প্রবণতা প্রদর্শন করছে। আমরা বিশ্বাস করি যে মধ্যমেয়াদে ইউরোর দরপতন পুনরায় শুরু হয়েছে এবং ডলারের সাথে প্যারিটির লেভেলে পৌঁছানোর জন্য খুব বেশি দূরত্ব বাকি নেই। পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইউরোর আরও দরপতনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে, কারণ বর্তমান মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি মার্কিন ডলারের পক্ষে রয়েছে।
বুধবার বিশেষভাবে দিনের দ্বিতীয়ার্ধে এই কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের অস্থির মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে। আমরা এই পেয়ারের মূল্যের দিকনির্দেশনা সম্পর্কে পূর্বাভাস দেয়া থেকে বিরত থাকছি, কারণ মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের ফলাফল যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট সৃষ্টি করতে পারে।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে, নিম্নলিখিত লেভেলগুলো পর্যবেক্ষণ করা উচিত: 1.0156, 1.0221, 1.0269-1.0277, 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, এবং 1.0845-1.0851। বুধবার মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে এবং এটি আজকের এবং এ সপ্তাহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন। ইউরোপীয় ইউনিয়নে, শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তবে মার্কেটে এই প্রতিবেদনের খুব সামান্য প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।